-
কবিতা
আলোর ফেরিওয়ালা মোশাররফ হোসেন খান আমার কাজ হলো আলো ফেরি করা। যাকে বলে ফেরিওয়ালা। বহু পথ অতিক্রম করার পর খুব ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে একটু বসেছি। কখন যে অবচেতনে অবসন্ন চোখে ঘুমিয়ে পড়েছি, মনে নেই। আসহাবে কাহাফের মতো কতোকাল কতো শত বছর ঘুমিয়ে ছিলাম, সেটাও জানি না। যখন ঘুম ভাঙলো তখন দেখি অন্ধকার! চারদিকেই অন্ধকার, কেবলই ঘুটঘুটে অন্ধকার! আমি ঘোরতর অন্ধকারে হাতড়িয়ে আমার আলোর সামগ্রী নিয়ে এক গভীরতর অন্ধকার ... ...
-
কবিতা
শিশির মেয়ে রফিক রইচ হেমন্তেরই নৌকা চড়ে শিশির মেয়ে আসলো হরেক রকম পিঠা দেখে ফুকফুকিয়ে হাসলো। হাসতে গিয়ে তার যে হাসি যখন হলো শেষ, মিষ্টি রোদের দুষ্টুমিতে থাকলো না তা বেশ। আমাদের গ্রাম নূর মোহাম্মদ দীন শিশির ধোয়া ঘাস চমৎকার চারপাশ বিকেল বেলা করবে খেলা ? আছে খেলার মাঠ, মাঠের পরে পুকুর আছে সান বাঁধানো ঘাট। আছে পাঠশালা সবুজ গাছপালা ধানের ক্ষেত সুফলা জমি সবজি মাছের ... ...
-
কবিতা
ষোলাআনাই মিছে সুকুমার রায় বিদ্যেবোঝাই বাবুমশাই চড়ি সখে বোটে, মাঝিরে কন, “বলতে পারিস সূর্যি কেন ওঠে? চাঁদটা কেন বাড়ে কমে? জোয়ার কেন আসে?” বৃদ্ধ মাঝি অবাক হয়ে ফ্যালফ্যালিয়ে হাসে। বাবু বলেন, “সারা জীবন মরলিরে তুই খাটি, জ্ঞান বিনা তোর জীবনটা যে চারি আনাই মাটি।'' খানিক বাদে কহেন বাবু, “বলতো দেখি ভেবে নদীর ধারা কেমনে আসে পাহাড় থেকে নেবে? বলতো কেন লবণপোরা ... ...
-
কবিতা
পারিপার্শ্বিক আকিব শিকদার থাবার আড়ালে থাকে সিংহের নখর কুকুরেরাই পৃথিবীকে নখ দেখিয়ে বেড়ায় আমরা তো জানি, কার খামচি বেশি শক্তিধর। শিং আড়াল করে রেখেছি বলে ভেবো না শিং নেই গুতো আমরাও পারি দুরন্ত বাইসনের মতো আমাদেরও আছে প্রতিউত্তর দেবার মতো যথার্থ জোর কথার খোঁচায় মনেতে ধরাতে পারি দারুণ ক্ষত। প্রাণিকূলে হাতির দাঁতই বৃহৎ এবং ভয়ংকর অথচ হাতি কাউকে দিয়েছে কামড়ে স্বপ্নেও ... ...
-
কবিতা
পেটুক ভুইল্লা জাকির আজাদ পাড়া জুড়ে পেটুক বলে টপে আছে ভুইল্লা, বিশটি মূলা খেয়ে ফেলেন মাটি থেকে তুইল্লা। রান্না ছাড়া খান যে নুডুলস প্যাকেটগুলো খুইল্লা, গামলা ভরে দুগ্ধ খাবেন মিশ্রি তাতে গুইল্লা। রুটি খাবেন প্রায় ত্রিশটি সাথে কলা ছুইল্লা, খেতে খেতে পেটটা ওঠে ভীষণ রকম ফুইল্লা। ছোট খাটো দেহের সাথে থাকে কেমন ঝুইল্লা, যখন যা-ই খানা খাবেন পরেই যান ভুইল্লা। দোয়েল ... ...
-
কবিতা
রাখাল ছেলে জসীম উদ্দীন রাখাল ছেলে! রাখাল ছেলে! বারেক ফিরে চাও, বাঁকা গাঁয়ের পথটি বেয়ে কোথায় চলে যাও? ওই যে দেখ নীল-নোয়ান সবুজ ঘেরা গাঁ, কলার পাতা দোলায় চামর শিশির ধোয়ায় পা, সেথায় আছে ছোট্ট কুটির সোনার পাতায় ছাওয়া, সাঁঝ-আকাশের ছড়িয়ে-পড়া আবীর রঙে নাওয়া, সেই ঘরেতে একলা বসে ডাকছে আমার মা- সেথায় যাব, ও ভাই এবার আমায় ছাড় না। রাখাল ছেলে! রাখাল ছেলে! আবার কোথা ধাও, পুব আকাশে ছাড়ল সবে ... ...
-
কবিতা
সভ্যতার ফেরিওয়ালা মির্জা মুহাম্মদ নূরুন্নবী নূর রাঙা ভোর দুলিয়ে আজ ফজর এসেছে দুয়ারে বহুদিন পর আঁধারে লুকায়িত সুবহে সাদিক এখন আমাদের বাড়ির দহলিজের দ্বারপ্রান্তে দেদীপ্যমান একমুঠো রোদের উত্তাপে স্যাঁতস্যাঁতে ভেজা জমিনটা এখন চাষাবাদের উপযোগী হয়ে উঠেছে বেশ প্রয়োজন আবাদের, দরকার একদল কাজপাগল চাষির চাই সাহসী যোদ্ধা, পাকা বোদ্ধা আর আমানতদার ফেরেশতা কবি আব্দুল্লাহ বিন ... ...
-
কবিতা
ফিলিস্তিনি শিশু জসীম উদ্দীন মুহম্মদ একটা শিশু ফিলিস্তিনি দু’চোখ ভরা জল তবুও তার বুকে আছে শক্তি, সাহস, বল! ভাই শহীদ, বাবা শহীদ শহীদ খেলার সাথি ঘর পুড়েছে, মন পুড়েছে কেমনে কাটে রাতি! শয়ে শয়ে বুলেট বোমা পাখির মতো উড়ছে শত্রুসেনার গোলার মুখে মরছে মানুষ মরছে! তবুও সেই বীর শিশুটির নাই কোনো ভয়-ডর দেশটা স্বাধীন করেই তবে ফিরবে আপন ঘর!! খুকুমণি এম. আবু বকর ... ...
-
কবিতা
নিজের পায়ে দাঁড়া ফররুখ আহমদ তোরা চাসনে কিছু কারো কাছে খোদার মদদ ছাড়া, তোরা পরের উপর ভরসা ছেড়ে নিজের পায়ে দাঁড়া॥ পরের উপর ভরসা করে ভয়ের পথে যাসনে মরে তোরা জয়ের পথে যা বাজিয়ে জয়ের নাকাড়া॥ খোদার মদদ পেয়ে যারা হলো জাহান জয়ী তারা মাড়িয়ে গেল মৃত্যু দুয়ার রাত্রি তিমিরময়ী॥ তোরা নিজের পায়ে দাঁড়াস যদি বইবে আবার আলোর নদী এই দুনিয়ার গুলশানে ফের জাগবে নতুন ... ...
-
কবিতা
বুলেট বিদ্ধ শহীদ হেলাল আনওয়ার চারপাশে কেবলই চিৎকার পাথরের বুক ফেটে বিষাদের ধ্বনি সমগ্র ফিলিস্তিন যেন উত্তপ্ত তেলের পাতিল। প্রতিনিয়ত ফ্রাই হচ্ছে নারী বৃদ্ধ আর শিশুদের কোমল দেহ। ওদের কান্নায় মরুর বুকে ধুকতে থাকা বালুকারাশিও আসিক্ত হয় বেদনা অশ্রুতে। শিশুদের অসহায় রক্তাক্ত চোখ কুত্তার খুবলে খাওয়া বিক্ষত দেহখানা আর মায়েদের পাথর চাপা শোক সাত আসমান ভেদ করে চলে যায় ... ...
-
কবিতা
গ্রামে যাব জোবায়ের রাজু থাকব নাকো এই শহরে গাঁয়ে যাব ফিরে, পালতোলা ওই নৌকাগুলো দেখব নদীর তীরে। নিরিবিলি শুনব আমি রাখাল বাঁশির সুর, বৃষ্টি হলে টিনের চালে শুনব টাপুর টুপুর। ধানক্ষেতের ওই মিষ্টি বাতাস লাগবে আমার গায়ে, দুপুর হলে জিরিয়ে নেব বটবৃক্ষের ছায়ে। পাখির গানে আকুল হব ধরব ঘাসফড়িং, প্রজাপতি ধরতে গেলে করবে তিড়িংবিড়িং। পায়ের তলায় মাখব আমি মেঠো পথের ধুলি, দেখব আমি চাতক ... ...